Reflections


Channel's geo and language: India, Hindi
Category: Religion


Ustaza Nayla Nuzhat’s Telegram Channel
🍃কমেন্টের ক্ষেত্রে অনুগ্রহ করে ইসলামী বিধিনিষেধ মেনে চলুন🍃
🚫অনুগ্রহ করে মাস'আলা জিজ্ঞেস করবেন না

Related channels  |  Similar channels

Channel's geo and language
India, Hindi
Category
Religion
Statistics
Posts filter


“তাঁর কাছে হাত তুলুন (দোয়া করুন),
তা কখনোই খালি ফিরে আসবে না,
কারণ আপনি সেই সত্তার কাছে প্রার্থনা করছেন,
যিনি শূন্যতা থেকে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।”

~ একটি আরবি কবিতা থেকে নেয়া


“আল্লাহ কোনো বিষয় দেরি করিয়ে দেন, যা (যার হিকমাহ) আপনি জানেন না।

যদি গায়েবের বিষয় প্রকাশ পেত, তবে আপনি সেটাই বেছে নিতেন যা আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন।

~ একটি আরবি কবিতা থেকে নেয়া


"তিনি বললেন, ‘আমি আমার অসহনীয় বেদনা, আমার দুঃখ শুধু আল্লাহর কাছেই নিবেদন করছি এবং আমি আল্লাহর কাছ থেকে তা জানি যা তোমরা জান না।"

{সূরা ইউসূফ: ৮৬}

▫️ আল্লাহর কাছে দুঃখ নিবেদন করা ধৈর্যের বিপরীত নয়, বরং ধৈর্যের বিপরীত হলো মানুষের কাছে অভিযোগ করা।▫️

🖊 আস-সা’দি




প্রশ্ন: অনেকে বলেন মানুষকে সৎকাজে আদেশ আর মন্দ কাজে নিষেধ করা অনর্থক নাক গলানো, অন্যের জীবনে। তাই কি? কারণ হাদীসে এসেছে:

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অনর্থক আচরণ ত্যাগ করা।
(আত তিরমিযী)

উত্তর: না। যখন শরিয়তের বিধান নিয়ে কথা হয়, সেটা অনর্থক আচরণ না। সেটা অবশ্যই আমাদের "কনসার্ন"। আমরা ভুল দেখলে, প্রতিহত করতে হবে।

আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন:

“তোমাদের মধ্যে যে অন্যায় দেখবে সে যেন তা তার হাত দিয়ে বাধা দেয় আর যদি হাত দিয়ে বাধা না দিতে পারে তবে যেন মুখ দিয়ে বাধা দেয়, আর যদি মুখ দিয়ে বাধা না দিতে পারে তবে যেন অন্তর দিয়ে বাধা দেয়, আর এটি হলো দুর্বল ঈমানের পরিচয়।”

(সহীহ মুসলিম: ৪৯)

বরং প্রশ্ন করা হবে সেই ভুলের জন্য যা চোখের সামনে সংঘটিত হয়েছে এবং তা প্রতিহত করার চেষ্টা করা হ‍য়নি।

~ শায়খ আব্দুল করিম আল খুদাইর হাফিজাহুল্লাহ এর লেকচার থেকে, সারমর্ম অনুবাদ করা হয়েছে।

https://t.me/A_Alkhudhair/20041


আমাদের প্রিয় "With the Qur‘an" চ্যানেল এখন Whatsapp এও থাকছে ইন শা আল্লাহ।

ফেসবুক এর পেজটি বন্ধ করে দেয়ার পর আমাদের শুধু টেলিগ্রামে চ্যানেল ছিল। অনেকেই টেলিগ্রাম ব্যবহার করেন না। তাই এখন থেকে এই চ্যানেল Whatsapp এও থাকবে, টেলিগ্রামের পাশাপাশি।

https://whatsapp.com/channel/0029VanGhQtD38CXd6q4nJ0B


Forward from: Scholarly Subtitles
Video is unavailable for watching
Show in Telegram
This Has Never Occurred Before in the Past! Shaykh 'Abdurrazzāq al-Badr حفظه الله


টিনএজারদের গ্রুপে যখনই উপদেশ দেই বাবা মায়ের সাথে যেকোনো সমস্যা নিয়ে পরামর্শ করার, এই একটা জায়গায় এসে থমকে যাই। বাবা মায়েরা কি সন্তানদের সেই সুযোগ দেন?

কয়জন বাবা/মা সন্তানকে এই আশ্বাস দিতে পেরেছেন যে তুমি যত বড় ঝামেলায় পড়, যত বড় ভুল করো, আমার কাছেই এসে বলবে? বাইরের মানুষকে না, বন্ধু বান্ধবকে না যারা হয়ত আরো বিভ্রান্ত করবে তাদেরকে?

অনেক পরিবারে আবার এটা করতে গিয়ে সন্তানকে যা খুশি করার অধিকার দিয়ে রাখে। সেটাও ভুল। আপনি জেনে বুঝে থাকে হারাম করতে দিবেন কেন?

মাঝামাঝি ব্যালেন্স করতে পারা শেখা জরুরি। সঠিক পথ দেখানো, হারাম থেকে বিরত রাখা জরুরি। সেই সাথে জরুরি এমন একটা কমিউনিকেশন রাখার যেন বাচ্চার জীবনে কী চলছে এটা বাবা মায়ের জানা থাকে। কোনো বিপদে পড়লে বাচ্চারা জানে প্রথম মানুষ যার কাছে সে যাবে হচ্ছে তার মা অথবা বাবা।

এটা কিভাবে করবেন?

- কথোপকথনের অভ্যাস থাকতে হবে। আলোচনা। মত বিনিময়। ওদের মনে কী আছে না জানলে সমাধান দিবেন কিভাবে?

- আপনার নিজের স্বভাব এমন হতে হবে যে আপনার moral values এর উপর ওদের আস্থা থাকে। ওরা জানবে আপনি মিথ্যা বলবেন না। আপনি কথা রাখবেন। আপনি ভনিতা করবেন না। এটা ওরা কিভাবে জানবে? বাবা মায়ের নিজেদের সম্পর্ক দেখে। এবং অন্যদের সাথে বাবা মায়ের আদান প্রদান দেখে।

- আপনার স্বভাব সুন্দর হলে আপনি যখন তাদেরকে বলবেন যে যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতে আপনার কাছে আসতে, ওরা সেটা বিশ্বাস করবে। বিশ্বাস করবে আপনার কাছে তখন আসলে আপনি সব কিছুর আগে তাদেরকে স্পেস দিবেন নিজের পরিস্থিতি বলার। আপনি বুঝবেন।

- কথা দিলে, কথা রাখতে হবে। অভয় দিলে, ভয় দেখানো যাবে না। এখন কোনো মা যদি বলে "বলো কী হয়েছে, আমি বকবো না।" আর শোনার সাথে সাথে বলে "কী, এসব করে এসেছ না?" তাহলে নিশ্চিন্ত থাকুন সন্তান আপনাকে ভবিষ্যতে আর বিশ্বাস করবে না।

এখন সন্তান কুকর্ম করে আসলে কি শাসন করবেন না? অবশ্যই করবেন। জন্ম থেকে শেখাতে থাকবেন আল্লাহর সীমা। পরিবেশ দিবেন। আর কুকর্ম করে এসে আপনাকে কেন বলছে সেটা বুঝবেন- বলছে সাহায্যের জন্য। অনুশোচনা আছে তাই বলছে। তখন সেখান থেকে বের হওয়ার পথ দেখান। ডুবে যাওয়ার পথ না।

এই যে বিশ্বাস তৈরি করা, কথোপকথনের অভ্যাস করা, এসব ছোট বেলা থেকেই করতে হয়। আর সেটা যদি করা না হয়ে থাকে, এখনও করতে চেষ্টা করুন। "আমি কথা খুঁজে পাই না" অথবা "আমার এত আহ্লাদী করতে ভালো লাগে না" এসব বলবেন না। আপনি মা মানে আপনার ভূমিকা অনেক বড়। সেই ভূমিকা পালনের যোগ্য নিজেকে করে তুলতে হবে। আপনি কথা না শুনলে, অন্য কেউ শুনবে এবং ভুল পথ দেখাবে, এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকুন।

(
লেখাটি প্রাইভেট গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছিল। On request এখানে দেয়া হলো।)


রামাদানের প্রস্তুতি নিয়ে লেখা থাকবে উইথ দ্যা কুরআন চ্যানেলে। ইন শা আল্লাহ।

https://t.me/WiththeQuran


Forward from: With the Qur'an
রামাদানের প্রস্তুতি ১

এই প্রসঙ্গে কথা এবার বেশি আগে শুরু হয়ে গেল তাই না?

গত রামাদানের পর অনেকে জানিয়েছিলেন মোবাইল আসক্তির কারণে তাদের রামাদান সুন্দর ভাবে পার হয়নি। অনেক কষ্টের কথা। সারাবছরের অপেক্ষা। আর ঠিক সেই সময়েই পদস্খলন।

তাই মনে হলো এবার একটু আগে থেকেই এই বিষয়ে কথা শুরু হোক।

পদস্খলন কিভাবে হয়?

ইদানিং প্রচুর মানুষের বর্ণনায় যা বুঝা যায়, সেটা হলো ভালো উদ্দেশ্যে স্ক্রল করতে গিয়েও পদস্খলন হয়। কী রকম?

মনে করুন কেউ এমনিই ঢুকেছিল ফেসবুকে অথবা ইনস্টাগ্রামে। ধরুন রান্না দেখতে। একটা ভিডিও শেষ হতে আরেকটা চলে এসেছে। সেটা কোনো মুভির ক্লিপ। না চাইতেও একটু দেখা হয়ে গিয়েছে। হয়ত বর্তমানে চলছে এমন কোনো মুভি বা হঠাৎ trending আগের কোনো মুভির ক্লিপ। বেশ কয়েকবার চোখে পড়লো। কয়েকবার সামনে আসার কারণে নামটাও জানা হয়ে গিয়েছে মুভির। সিন টা ভালো লাগছে। এবার মন চাইলো একটু সার্চ দিয়ে দেখতে। ট্রেলার দেখে আরো ভালো লাগলো। মন চাইলো দেখতে। দেখা হলো। অনুশোচনা হলো। কিন্তু আবার কিছু একটা করতে গিয়ে আরেকটা রিল আসলো। এবার সেটা কোনো ড্রামার দৃশ্য। একটু মুসলিম মুসলিম লাগছে- ভদ্র। "মুসলিমদের" ড্রামা। কিছুক্ষণের জন্য শয়তান ভুলিয়ে দিবে যে, ভদ্র হলেও সেটা অশ্লীলতা। হারাম। এবার ওটা খুঁজে দেখা। এগুলো আবার অল্প দেখায় শেষ হয়ে যায় না। অজস্র পর্ব। এবার অভ্যাস হয়ে গেল দেখার। একটা থেকে আরেকটা। অনুশোচনা এখনও আছে। কিন্তু পাপ থেকে সরে থাকার মজবুত মনটা কেমন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।

গতবার যারা মন খারাপ করে নিজেদের অধঃপতনের বর্ণনা দিয়েছিলেন, এভাবেই দিয়েছেন। কিভাবে একটু একটু করে হারিয়ে ফেলে মানুষ নিজেকে। অতঃপর সালাতে তাড়াহুড়া। সুন্নাহ বাদ দেয়া। কুরআনে সময় না দেয়া। ড্রামা এমন জায়গায় এসে থামলো, যে রামাদানে না দেখলে পর্ব মিস।

এই বিষয়টা থেকে রামাদান এ না শুধু, সবসময়ই সতর্ক হওয়া উচিত।কারণ, মৃত্যুর তো কোনো নির্দিষ্ট মাস নেই!

যাদের এধরনের সমস্যা নেই, তাদের জন্যও কিন্তু সময় নষ্ট এক অনেক বড় সমস্যা। এই অযথা স্ক্রল করার অভ্যাস রামাদানের অনেক অমূল্য মুহূর্ত ছিনিয়ে নেয়।

তাহলে কী করণীয়?

এই একাউন্টগুলো বন্ধ করে দিন। যেকোনো আসক্তির মত প্রথম প্রথম খারাপ লাগবে। তারপর দেখবেন, এসব ছাড়া চলা যায় এবং খুব ভালোই চলা যায়। অ্যাপ মুছে দিন। যেন অন্যমনস্ক হয়ে সেসবে ঢুকতে না পারেন।

এই চেষ্টা এখন থেকে শুরু হোক। ইন শা আল্লাহ আমরা অনেক সুন্দর একটি রামাদান পাবো সামনে।


অনেকে বলেন যে আগস্ট থেকে ইউটিউবে খবর দেখা বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে সময় নষ্ট হচ্ছে, মনোযোগ থাকছে না। অনেকে নিউজের জন্য ইউটিউবে ঢুকলেও এরপর আর বিষয়টা শুধু নিউজ দেখাতে সীমাবদ্ধ থাকছে না। এর থেকে কিভাবে নিজেকে বের করা যাবে?

▪️আগস্ট থেকে নিউজ দেখাতে সময় দেয়া অনেক ভালো মানুষেরও বেড়ে গিয়েছিল। তখন একটা সময় কিছুদিন, কিছু পরিমাণে সেটা জরুরি ছিল।

▪️এরপর যা চলছে, এটা কিন্তু একটি প্রক্রিয়ার অংশ। এটা নিয়ে সারাদিন নিউজ দেখে আমরা কোনো পরিবর্তন আনতে পারব না। কী চলছে এটা জানা যদি উদ্দেশ্য হয়- সেটা নিউজ না দেখেও জানা সম্ভব। সম্ভবত এমন কোনো বাসা এখন নেই যেখানে পুরুষেরা জানেন না দেশের পরিস্থিতি কী। তাদের থেকে জেনে নেয়া যায় সার্বিক পরিস্থিতি। সেটা সম্ভব না হলেও অন্য কোনো মানুষের থেকে জেনে নেয়া যায়। অনেক টক শো, অনেক থিওরি দেখে আপনি-আমি কী করবো?

▪️ আজকে যদি আমরা মারা যাই, এই দেশ, টক শো সবই নিজের মত চলবে। তাহলে এখন কেন এসব জীবনের এতখানি জায়গা নিবে যে আখিরাত ভুলে যাবো?

▪️শয়তানের প্রকৃতি হলো সে একটা খারাপে মানুষকে দেখে সন্তুষ্ট হয়না। চেষ্টা করে আরো খারাপে নিয়ে যেতে। তাই বিষয়টা শুধু নিউজ দেখাতে সীমাবদ্ধ থাকে না অনেকের জন্য। থাম্বনেইল এ আসা ড্রামা/সিরিয়ালের সাজেশন, শর্টস এ দেখা মুভির ক্লিপ এসবে চলে যায়। একটা থেকে আরেকটায়।

শুধু যদি নিউজে সীমাবদ্ধ থাকে বিষয়টা কারো জন্য, তারপরও সেখানে সময় নষ্টের বিষয়টা থাকে। জরুরি কাজ পিছিয়ে যাওয়া, দ্বীনি পড়ালেখায় মন না বসা, ইবাদতে তাড়াহুড়া হওয়া এসব হতে পারে। আর নিউজে আসা মিউজিক, বিজ্ঞাপনের হারাম কনটেন্ট- এসব তো আছেই।

এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?

আমরা সচেতন হয়ে থাকলে এসবের সমস্যা নিজেরাই বুঝি। তাহলে সত্যিই মন থেকে চেষ্টা করতে হবে নিজেদের এই অভ্যাস থেকে মুক্ত করার।

▫️সালাতে মনোযোগ বাড়াতে হবে। সালাতে মানুষকে খারাপ কাজ থেকে, অশ্লীলতা থেকে দূরে রাখে। আযানের উত্তর দেয়া। সুন্দর করে অজু করা। সময়মত সালাত আদায় করা, সালাতের রোকন, ফরয এবং সুন্নাহ কাজগুলো আদায়ে মনোযোগী হওয়া। ফরয সালাতের আগের/পরের সুন্নাহ গুলো পড়া। সালাতের পরের যিকির শান্ত হয়ে বসে পড়া। মন যতই ইউটিউবে ছুটে যাওয়ার জন্য অস্থির হোক, তাকে বেঁধে রাখা, শাসন করা যে, সালাতে কোনো তাড়াহুড়া হবে না।

▫️সকাল ও বিকালের যিকির নিয়মিত পড়া। কী পড়ছি সেটা বুঝতে চেষ্টা করা।

▫️আল্লাহর কাছে দোয়া করা। অনুনয় করা যেন তিনি এই বদঅভ্যাস দূর করে দেন। যেন তিনি দৃঢ় করেন। এক্ষেত্রে সাজদায় দোয়া গুলো পড়া যায়।

▫️কুরআন পড়া। আপনি কুরআন স্টুডেন্ট হলে আপনার জন্য এটা সহজ। আপনি কেন অযথা কাজে সময় দিবেন? কত রিভিশন দেয়ার আছে, কত কী পড়ার আছে? আপনি কুরআন স্টুডেন্ট না হলে ভাবুন, কুরআন পড়া ঠিক করার সময়গুলো কিসে যাচ্ছে? কুরআনের চাইতে ভালো কিছুতে অবশ্যই না। আমরা কি এভাবে সময় নষ্ট করতে পারি?

▫️ সাধারণত ফ্রি সময়ে মানুষ এসব নিয়ে বসে। রাতের খাওয়া শেষ হলে। বিকালের অবসরে। সেই সময়টায় অন্য কিছু করতে চেষ্টা করা। একটা লেকচার শুনতে চেষ্টা করা। অথবা ইউটিউবের থেকে অনেক দূরে থেকে কিছু করা। যেমন কাপড় গুছানো। নাস্তা বানানো। ফার্নিচার পরিষ্কার করা। দৈনন্দিন কাজ যেগুলো না করে খালি ইউটিউব নিয়ে বসতে মন চায়। সেসব করা। শুরু করতে ইচ্ছা না করলেও দেখবেন করার পর ভালো লাগছে। কাজ জমে নাই। মাথায় প্রেসার লাগছে না। যেহেতু কাজ থেকে মন পালাতে চাইছে না, তখন ইউটিউব ছাড়াও অন্য কিছু করতে মন চাইবে।

▫️কেউ বলতে পারেন যে তিনি সালাত ঠিকমত পড়েন, বাসার কাজও করেন। তারপরও আসক্তি যাচ্ছে না। তার অর্থ হলো তার জীবনে ফ্রি টাইম অনেক বেশি। বাসার কাজ করে, শান্তিমত ইবাদত করে, বাসার মানুষকে সময় দিয়ে, আত্মীয়দের খোঁজ নিয়েও যদি আপনার ইউটিউব নিয়ে সময় ব্যয় করার মত সময় থাকে, আপনার উচিত হবে কোনো উপকারী কোর্স এ ভর্তি হওয়া। কারণ সেই সময় আপনার আছে। সেই সময়কে ভালো কাজে না লাগালে শয়তান এসে সেই সময়টা ছিনিয়ে নিবে। ইউটিউব দিয়ে না হলে অন্য কিছু দিয়ে।

🔳আপনার আসক্তি যেটাই হোক, এভাবে চেষ্টা করে দেখুন। একাউন্ট গুলো মুছে দিন, অ্যাপ গুলোও। দরকারে কোনো একাউন্ট রাখতে হলে অ্যাপ uninstall করে রাখুন। যখন লাগবে নামিয়ে কাজ শেষ করে আবার মুছবেন।

এই জীবনটা পুরাটা জুড়েই আমাদের শয়তানের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা আছে। যেই জানালা দিয়ে সে ঢুকতে চায়, সেটাকেই বন্ধ করুন।


(নিচের লেখাটি বোনদের উদ্দেশ্যে লেখা ছিল। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে শেয়ার করার সুবিধার্থে এখানে দেয়া হলো)


"সন্তানদের প্রতি অন্ধ ভালোবাসা বাবা/মা কে যেই পরিমাণে বিরত রাখে তাদের (সন্তানদের) আল্লাহর পথ দেখানো থেকে, সেই অনুপাতে কিয়ামতের দিন সন্তানদের সাথে তাদের বাবা/মায়ের শত্রুতা থাকবে।"

~ শায়খ খালিদ আস সাক‘আবি হাফিজাহুল্লাহ


আপনি যাকে ভালোবাসা দেখাবেন, সে কিভাবে সেই ভালোবাসা দেখতে চায় সেটা কিন্তু মাথায় রাখার কথা।

আপনার অতি ভালোবাসার মানুষটার গরুর গোশতে এলার্জি। কিন্তু আপনি চান তাকে সেটাই খাওয়াতে- তাই এলার্জি জেনেও জোর করে তাকে গরুর গোশতই খাওয়াবেন- সেটা কী ভালোবাসা?

এমনিই একটা উদাহরণ দিলাম আরকি।

-----------

আপনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনেক ভালোবাসেন?

তাঁর অনুসরণ করুন। ইনফ্যাক্ট, আল্লাহকে ভালোবেসে থাকলে তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করতে হবে। তাঁকে সবচেয়ে বেশি যারা ভালোবাসতেন, তাঁরা কী করতেন বুঝতে হবে। সাহাবা রাদিয়াললাহু আনহুম তাঁর কথা মেনে চলতেন। তিনি যেই দ্বীন শিখিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা সেটা আল্লাহর ইচ্ছায় হুবহু হেফাজত করেছেন। কতখানি - সেটা আসলে এই সামান্য লেখায় বুঝানো সম্ভব না- তার জন্য একটু পড়ালেখা করতে হবে। আর হ্যাঁ- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে তাঁরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিন করেননিআপনি সেটা করার কে?

এটা কি এমনিই করছেন? Happy Birthday যেভাবে করে মানুষ? তাহলে তো শয়তানের পূজারীরা যেই অনুষ্ঠান উদ্ভাবন করেছে সেটা করছেন। নাকি এটা দ্বীন ভেবে করছেন? তাহলে এমন কিছু করছেন যা দ্বীনের অংশ ছিলই না!
আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গিয়েছেন:

যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে (নিজের পক্ষ থেকে) কোন নতুন কথা উদ্ভাবন করল---যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।” (বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ৪৫৮৯নং)

যেই উৎসব আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করেননি, তাঁর সাহাবারা যারা তাঁকে জীবন দিয়ে ভালোবাসতেন তাঁরা করেননি- সেই উৎসব করে দ্বীনকে অপমান করা ছাড়া আর কী হচ্ছে? আর এটা কেমন ভালোবাসা যা দ্বীনের মাঝে নতুন কিছু সংযোজন করার মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে? প্রত্যাখ্যান যোগ্যকে সাদরে পালন করে কী ভালোবাসা দেখানো হচ্ছে? এই ভালোবাসা কি সেই ভালোবাসা, যা দেখানোর কথা? এটা কি আদৌ ভালোবাসা??

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন পালনের কোনো দলিল নেই। জন্মের তারিখটা আসলে কবে সেটা নিয়েই ঐক্যমত নেই।

আর আপনার তাঁর প্রতি ভালোবাসার দলিল? সেটা তাঁর শেখানো দ্বীনকে মেনে চলার মাধ্যমে দেখান। দ্বীনের বিরোধিতা করার মাধ্যমে না!

আল্লাহুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ'লা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ।

---------------

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

‘‘তোমরা (দ্বীনের) নব প্রচলিত বিষয়সমূহ থেকে সতর্ক থাক। কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয় বিদআ‘ত এবং প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা’’। [সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৯৯১ ও সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৭৬। তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান ও সহীহ বলেছেন।]

অনুগ্রহ করে ভালোবাসার নাম করে বিদআতে শামিল হবেন না।


কারো কারো ধারণা উলামারা দুনিয়াবি বিষয়গুলো, ঘটনাগুলো বুঝেন না। ভালো কথা। এই রকম ধারণা যারা রাখেন, তাদেরকে আমন্ত্রণ দেয়া থাকলো, আলেম হওয়ার প্রক্রিয়া পার করার। অবশ্য তার আগে তারা যেন প্রক্রিয়াটি কী জেনে নেন। নাহলে আলেম হওয়ার চেষ্টায় কেউ কেউ আবার ঘাস খাওয়া শুরু করতে পারেন। কারণ বেশিরভাগের তো এটাই ধারণা- ঘাস খেলেই উলামা হওয়া যায়, পড়ালেখা লাগে না। যাই হোক, দুনিয়ার ঘটনা বুঝার তাবৎ জ্ঞান(!) তো সেসব মানুষের আগে থেকেই আছে। সাথে আলেম হয়ে গেলেই পারেন সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পার হয়ে। তাহলে "আলেমরা তো আসলে বুঝতে পারেন না" সমস্যার একটা সমাধান হয়।

আপনি আলেম হবেন না, দ্বীনের বিষয়ে ভালো করে জানবেন না, কিছু বিষয়ে আলেম বুঝেন আর কিছু বিষয়ে আপনিই বেস্ট বুঝেন ভাববেন, আবার পুরাপুরি দুনিয়া মুখিও হবেন না। আপনার তো পুরাই "বিদঘুটে জানোয়ার কিমাকার কিম্ভুত" অবস্থা!

নিজের যা মনে চায় সেটাকে সঠিক দেখাতে কেউ কেউ উলামাদের "দালাল", "বুঝে না", "জানে না", বলে কত কথা শুনিয়ে দেয়। যেই প্রক্রিয়া পার করার যোগ্যতা নিজেদের নাই, দুই চারটা কোর্স/ডিপ্লোমা করে আর একটু লিখতে শিখে ভাবেন সেই প্রক্রিয়া পার হওয়া আলেমদের যা ইচ্ছা বলা যায়। বলতে থাকুন। শুধু গীবতের বোঝা বইতে হবে তা না, আলেমদের কথা না শোনার কারণে অজ্ঞতার বোঝাও বইতে হবে। সেই সাথে বইতে হবে না জেনে কথা বলে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার বোঝা।

নিজের আখিরাত কিসে নিরাপদ সেটাই বুঝতে পারছেন না। ওদিকে আলেমদের আজীবনের অধ্যবসায়কে "উনারা এসব বুঝেন না" বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। আচ্ছা পাগল তো!


“তোমাদের কেউ যখন কোন অন্যায় দেখবে তখন সে যেন তা হাত দ্বারা (শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে) পরিবর্তন করে দেয়। যদি সে সে সামর্থ্য না রাখে তাহলে যেন মুখ দিয়ে পরিবর্তন করে (মুখে প্রতিবাদ করে)। যদি এ সামর্থ্যও না থাকে তাহলে যেন অন্তরে তাকে ঘৃণা করে (এবং মনে মনে ভিন্ন পন্থায় তা প্রতিহত করার পরিকল্পনা আঁটতে থাকে)। আর এটি হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতার স্তর।” [সহিহ মুসলিম]

এ হাদিসে অন্যায় প্রতিহত করার তিনটি স্তর বলা হয়েছে। এ তিনটি মধ্যে ১ম স্তরটি অর্থাৎ হাত দ্বারা বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে পরিবর্তন করা এর পরের দুটি স্তর থেকে নি:সন্দেহ অধিক উত্তম। তবে তা শক্তি-সামর্থ্যের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ যদি কারও অন্যায় প্রতিরোধের জন্য পর্যাপ্ত শক্তি-সামর্থ্য থাকে তাহলে তা ব্যবহার করে অন্যায় পরিবর্তন করবে। আর এটি হল শক্তিশালী মুমিনের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু সে শক্তি না থাকলে মুখে (যেমন: মৌখিকভাবে সরাসরি প্রতিবাদ করা, বক্তৃতা, সভা-সেমিনার, টকশো, সামাজিক মাধ্যম, লেখালেখি, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ইত্যাদি মাধ্যমে) প্রতিবাদ করবে। সে সুযোগ না থাকলে অন্তরে উক্ত অন্যায় কর্মের প্রতি ঘৃণা পোষণ করবে এবং বিকল্প পন্থায় অন্যায় প্রতিহত করার সুযোগ খুঁজবে। অন্যায়ের প্রতিবাদে এই ধারাবাহিকতা লঙ্ঘন করা যাবে না।

❑ দেশে সংঘাত ও হানাহানি পরিবেশ কতটা ক্ষতিকর?

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, নিজেদের মধ্যে সৃষ্ট সংঘাত, হানাহানি, কাটাকাটি ও রক্তপাত আমাদের একতা, সংহতি ও শক্তিকে বিনষ্ট করবে যা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে। কেননা শত্রুরা এমন ফিতনা-সংকুল ও বিশৃঙ্খল পরিবেশের অপেক্ষায় থাকে।

অরাজক পরিস্থিতি দেশের সাধারণ জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে, দেশের অর্থনীতিতে ধ্বস নামে, দেশের সার্বিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে, সমাজে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র, হাহাকার ও অশান্তি বৃদ্ধি করে, শিক্ষা, গবেষণা, দ্বীন চর্চা, দাওয়াতি কার্যক্রম ইত্যাদি সব কিছুই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অবশ্য আমাদের দেশে তথাকথিত গণতন্ত্র না আছে সরকারের মধ্যে, না আছে জনগণের মধ্যে। বরং এখানে বিশৃঙ্খলা করাটাই যেন নিয়ম। এটাই যেন গণতন্ত্রের ভাষা।
বাস্তবতা হলো, যেমন জনগণ তেমন সরকার। যে দেশের অধিকাংশ মুসলিম ইসলামি আদর্শ ও রীতি-নীতি এবং ইসলাম চর্চা থেকে দূরে চলে যায় আল্লাহ তাদের উপর আজাব হিসেবে জালিম শাসককে চাপিয়ে দেন।

সুতরাং এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় আল্লাহর দ্বীনের পথে আমাদেরকে ফিরে আসতে হবে এবং সব ধরণের পাপাচার ও আল্লাহর নাফরমানি থেকে তওবা করতে হবে। অন্যথায় এহেন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

আমাদের কর্তব্য, সর্ব প্রকার পাপাচার, আল্লাহর নাফরমানি, শিরক, বিদআত, মুনাফেকি, নৈতিক স্খলন, জুলুম-নির্যাতন, অন্যায়-অবিচার, অধিকার হরণ, দুর্নীতি ইত্যাদি থেকে আল্লাহর নিকট তওবা করা এবং নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো। তাহলে আল্লাহও আমাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবেন। অন্যথায় পরিবর্তনের আশা করা দূরাশা ছাড়া কিছু নয়।

✪ আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ اللَّـهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ

"আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। (অর্থাৎ পাপ-পঙ্কিলতা ও আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে ফিরে আসে)।" [সূরা রা'দ: ১১]

✪ তিনি আরও বলেন,

ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّـهَ لَمْ يَكُ مُغَيِّرًا نِّعْمَةً أَنْعَمَهَا عَلَىٰ قَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ

"তার কারণ এই যে, আল্লাহ কখনও পরিবর্তন করেন না সে সব নেয়ামত, যা তিনি কোন জাতিকে দান করেছিলেন, যতক্ষণ না সে জাতি নিজেই পরিবর্তিত করে দেয় নিজের জন্য নির্ধারিত বিষয়।" [সূরা আনফাল: ৫৩]

আল্লাহ এই সরকার, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাধারণ জনগণকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং দেশে ফিতনার আগুন নির্বাপিত করে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করুন। আমিন।
-আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
জুবাইল, সৌদি আরব
তারিখ: ১৮-০৭-২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
#abdullahilhadi


কোটা সংস্কার আন্দোলন: ইসলামের দৃষ্টিতে রাষ্ট্র ও জনগণের করণীয়

প্রশ্ন: কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়ে আমাদের করণীয় কী? উভয় পক্ষের দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সংঘর্ষ, অবরোধ ইত্যাদি কার্যক্রমে জন দুর্ভোগ বাড়ছে বৈ কমছে না। এ বিষয়ে শরিয়ার হুকুম কী?
উত্তর:
একটি দেশে সুস্থ ও সুন্দর জীবনধারার জন্য অশান্তি ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

এ ক্ষেত্রে সরকারের কর্তব্য, অনতিবিলম্বে কোটা সংস্কার বিষয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের সাথে বসে তাদের দাবী-দাওয়া আন্তরিকতার সাথে শোনা এবং অতি দ্রুত সুষ্ঠু সমাধানের পথ বের করা ও সংকট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যদি তাদের দাবি-দাওয়া সঠিক ও ন্যায় সঙ্গত হয় তবে তা মেনে নেওয়া। অন্যথায় তাদের নিকট যৌক্তিকভাবে তাদের দাবীর অন্যায্যতা ও অসারতা ব্যাখ্যা করা অথবা আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা।

কিন্তু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মহল থেকে ছাত্রদেরকে ব্যঙ্গোক্তি ও উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে খেপিয়ে তোলা কোন শাসকের জন্য গ্রহণযোগ্য আচরণ হতে পারে না। এর দ্বারা দেশে হিংসাত্মক কার্যক্রম, রক্তপাত ও বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পাবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

অনুরূপ ভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব দেশে সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সর্বসাধারণের নিরাপত্তা বিধান করা। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতেই নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের রক্ত ঝরছে। ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। আহত হয়েছে, কয়েক শত। হাসপাতালের শয্যায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে অনেকে।

একজন নিরস্ত্র প্রতিবাদ কারী শিক্ষার্থীকে দু হাত উপরে উত্তোলিত অবস্থায় সামনে থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এটা কোনও দায়িত্বশীল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ হতে পারে না। প্রয়োজন বোধে তাকে অন্যভাবে সরানো‌ যেত।

আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, সরকার দলীয় ক্যাডার বাহিনী লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। হাসপাতালে আহত রোগীদের উপর আক্রমণ করছে। অথচ সেখানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্যাতিতদের সাহায্যে এগিয়ে না এসে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রশাসনের এহেন ভূমিকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আর ছাত্রদের উচিত, কোন ধরনের ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও জানমালের ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরা, গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা, জনমত সৃষ্টি করা, সভা, সেমিনার, লেখালেখি, সোশ্যাল মিডিয়া, টকশো, স্মারকলিপি প্রদান‌ ইত্যাদি বিভিন্নভাবে কোটা সংস্কারের যৌক্তিকতা তুলে ধরা। আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া।

এত কিছুর পরও সরকার দাবি পূরণে সম্মত না হলে ধৈর্যের সাথে বিকল্প পন্থা খুঁজবে, ইমানদারগণ সমস্যার সমাধানের জন্য মহান আল্লাহর নিকট দুআ করবে ও অন্য সুযোগের অপেক্ষায় থাকবে কিন্তু কোনভাবেই ফিতনা-ফ্যাসাদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অবকাশ নেই। কোন এমন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না যাতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরে। কেননা ইসলাম তা সমর্থন করে না।

❑ দাঙ্গাহাঙ্গামা, মারামারি-কাটাকাটি ও রক্তপাত সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

ইসলামে সমাজে ফেতনা-ফ্যাসাদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং জি**হাদের ময়দা ছাড়া র**ক্তপাত ও দাঙ্গাহাঙ্গামাকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করা হয়েছে।

এ মর্মে কয়েকটি হাদিস পেশ করা হলো:

✪ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে বলেন,

« إنَّ دِماءكُمْ ، وَأمْوَالَكُمْ ، وأعْرَاضَكُمْ ، حَرَامٌ عَلَيْكُمْ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا »

“নিশ্চয়ই তোমাদেল পরস্পরের রক্ত (জীবন), ধন-সম্পদ ও মান-সম্মান পরস্পরের জন্য হারাম ও সম্মানের যোগ্য, তোমাদের আজকের এ দিনের সম্মানের মতই।” [বুখারী, হাদিস নং ১০৫; মুসলিম, হাদিস নং ৪৪৭৭]

✪ তিনি আরও বলেন,

« كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ : دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ »

“প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির রক্ত (জীবন), ধন-সম্পদ ও মান-সম্মান অপর সব মুসলিমের জন্য হারাম।” [মুসলিম, হাদিস নং ৬৭০৬]

✪ তিনি আরও বলেছেন,

« سِبَابُ المُسْلِمِ فُسُوقٌ ، وَقِتالُهُ كُفْرٌ »

“মুসলিম ব্যক্তিকে গালি দেওয়া পাপ এবং তার বিরুদ্ধে লড়াই করা কুফরি।” [বুখারী, হাদিস নং ৬৬৬৫; মুসলিম, হাদিস নং ২৩০]

❑ অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করার ব্যাপারে ইসলামের মূলনীতি কী?

আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি,

مَنْ رَأَى مِنْكُم مُنْكراً فَلْيغيِّرْهُ بِيَدهِ ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطعْ فبِلِسَانِهِ ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبقَلبهِ وَذَلَكَ أَضْعَفُ الإِيمانِ


আমরা কি বিশ্বাস করি যে আল্লাহ দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন? আমরা কি বিশ্বাস করি যে কুরআন সুন্নাহের মাঝে আমাদের জীবনে প্রয়োজন এমন সকল নির্দেশনা রয়েছে?
আমরা কি মানি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আদর্শ?

কোনো পরিস্থিতিতে সেক্ষেত্রে আমাদের কুরআন সুন্নাহে ফেরত যেতে হবে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উদাহরণে ফেরত যেতে হবে। এবং এই কুরআন সুন্নাহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর সাহাবারা কিভাবে বুঝেছেন, তাদের ছাত্ররা কিভাবে বুঝেছেন সেখানে ফেরত যেতে হবে।

আবেগ দিয়ে যদি ইসলাম চলতো, হুদাইবিয়া সন্ধির দিন ইসলাম শেষ হয়ে যেত। আবেগ দিয়ে ইসলাম চললে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কবর একদিন মাজারে পরিণত হতো। আবেগ দিয়ে ইসলাম চললে এতদিনে ইসলামে যা ইচ্ছা তাই ঢুকে যেত।

ইসলাম আবেগ দিয়ে চলে না। গরম গরম লেখা দিয়েও চলে না। জ্ঞান বিবর্জিত অনেক যুক্তি আর অনেক তর্ক দিয়েও চলে না। ইসলাম চলে না সেলিব্রিটি বা ফলোয়ার দিয়ে।

আমার মন অনেক কিছু চাইবে। কিন্তু সেই মনকে আমি ইসলামের সীমার মাঝে আঁটিয়ে নিয়ে চলবো। এখানে হলো আত্মসমর্পণ- নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর ইচ্ছার কাছে সমর্পণ করা।

অনেক লেখা ভালো লাগবে। অনেক "আমি মনে করি" ভালো লাগবে। অনেক বিখ্যাত কলমের যুক্তি কপচানো ভালো লাগবে। সেই ভালো লাগাকে ইসলামের সীমায় আঁটাতে হবে। এই কথা কি আমার ভালো লাগছে বলে আমার কাছে গ্রহণযোগ্য? তাহলে আমি আমার "মন" এর দাস। এই ভালো লাগার ভিত্তি কি কুরআন, সুন্নাহ, রাসূলের অনুসরণ এবং সেইভাবে শরিয়ত কে বুঝা যেভাবে আমাদের পূর্ববর্তীরা বুঝেছেন? সাহাবারা, তাদের ছাত্ররা? তাহলে হ্যাঁ, আমরা আল্লাহর আনুগত্য করছি।

বুঝতে পারছেন না পথ ঠিক আছে কিনা? জ্ঞান চর্চা করুন। আলেম উলামাদের থেকে জ্ঞান চর্চা করুন। যে যা খুশি থিওরি দিবে করণীয় আর বর্জনীয় নিয়ে, উলামাদের নিয়ে বাজে কথা বলবে, কুরআন সুন্নাহ থেকে এক চিমটি নিয়ে বাকিটা নিজে কী ভাবে বলে দিবে আর আপনি নিজেকে বুঝাবেন সেটাই দ্বীন- নিজেকে এত নামাবেন না।

দ্বীন জানুন এবং দ্বীন মানুন। নাহলে সত্যিই হারিয়ে ফেলবেন নিজেকে চারিদিকের সকলের থিওরির কচকচানির ভিড়ে।


মুসলিম শাসকের প্রতি আমাদের কীরূপ আচরণ হওয়া উচিত? এবং অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কী হওয়া দরকার সেই বিষয়গুলো নিয়ে উস্তায মোহাম্মদ এনামুল হক এর অসাধারণ একটি আলোচনা! আলোচনাটি মাসজিদ আস সিদ্দিক (রাঃ) কমপ্লেক্স এ দেয়া হয়েছিল ২৮ জানুয়ারী ২০২২ সালে। ভিডিও মাসজিদ আস সিদ্দিক (রাঃ) কমপ্লেক্সের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেয়া। যে বইটি থেকে আলোচনা করা হয়েছে সেটি হচ্ছে - ‘‘Abdullah Al-Athari’’ এর লেখা ‘‘Islamic Beliefs A Brief Introduction to the 'Aqeedah of Ahl Assunnah Wal-jama'a’’ বইটি থেকে ‘‘The obligation to obey Muslim leader with regard to that which his right and proper’’ অধ্যায় থেকে আলোচনা করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বক্তব্য যা আমরা নিজেরা জানবো এবং অন্যদের কাছেও এটি শেয়ার করবেন, ইনশাআল্লাহ।


https://youtu.be/pGiNJ1Rs0g0?si=KujEpMwWPnwP2LDa



20 last posts shown.