Reflections


Гео и язык канала: Индия, Хинди
Категория: Религия


Ustaza Nayla Nuzhat’s Telegram Channel
🍃কমেন্টের ক্ষেত্রে অনুগ্রহ করে ইসলামী বিধিনিষেধ মেনে চলুন🍃
🚫অনুগ্রহ করে মাস'আলা জিজ্ঞেস করবেন না

Связанные каналы  |  Похожие каналы

Гео и язык канала
Индия, Хинди
Категория
Религия
Статистика
Фильтр публикаций


রামাদান: পরিবর্তনের মৌসুম

রামাদান মুসলিমদের জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সুযোগ এবং রূপান্তরের মৌসুম; যার মাধ্যমে সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়, যার জন্য সিয়াম ফরজ করা হয়েছে। আর তা হলো, তাকওয়া অর্জন করা।

এই সুযোগগুলোর মধ্যে প্রথমটি হলো আকিদা মজবুত করা এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার জন্য নিয়তকে খাঁটি করা। কারণ সিয়াম এমন একটি ইবাদত, যা অন্য ইবাদতের মতো রিয়া দ্বারা প্রভাবিত হয় না। তাই আল্লাহ এর প্রতিদান নিজে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার পরিমাণ তিনি ছাড়া কেউ জানে না। রাসূলুল্লাহ ﷺ তার রবের পক্ষ থেকে বর্ণনা করে বলেছেন:

“আদম সন্তানের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, তবে সিয়াম ব্যতিক্রম; এটি আমার জন্য, এবং আমি নিজে এর প্রতিদান দেব।”

(সহীহ আল বুখারী ১৯০৪)

এই বরকতময় মাসে নিজের মাঝে পরিবর্তন আনার মূল্যবান সুযোগগুলোর মধ্যে আরেকটি হলো ইবাদতে স্থিতিশীলতা অর্জন করা এবং আত্মাকে আনুগত্যের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া, ফরজগুলো রক্ষা করা, নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা এবং রামাদানের পরেও তা অব্যাহত রাখা। যেন সালাত, সিয়াম, যাকাত ইত্যাদি ইবাদত একজন মুসলিমের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সে সেগুলো সন্তুষ্টি, আত্মসমর্পণ, আনুগত্য এবং ঈমান- এর সাথে এবং সওয়াবের আশায় পালন করে। ফলে সেগুলো তার চোখের শীতলতায় পরিণত হয়, যেমন হাদিসে এসেছে:

“আমার চোখের শীতলতা সালাতে রাখা হয়েছে।”

(আন নাসাঈ ৩৯৩৯)

রামাদান ধৈর্য, সত্যবাদিতা, সহনশীলতা, ধীরস্থিরতা, বিনয় ইত্যাদি সমস্ত উত্তম গুণাবলী অর্জনের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। পাশাপাশি এটি সমস্ত নিন্দনীয় গুণাবলী, যেমন: সবরের অভাব, মিথ্যা, প্রতারণা, অহংকার, বিদ্বেষ, হিংসা ইত্যাদি পরিত্যাগ করার সুযোগ। কারণ সিয়াম রুহকে পরিশুদ্ধ করে এবং তাকে উত্তম চরিত্র ও সদাচরণের দিকে পরিচালিত করে।

রামাদান ক্ষতিকর এবং শরিয়তের বিরোধী অভ্যাসগুলো থেকে মুক্তির সুযোগ, যেমন: ধূমপান, মাদকদ্রব্য গ্রহণ ইত্যাদি, যা মানুষকে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে। যেহেতু মুসলিম দিনের দীর্ঘ সময় এসব থেকে বিরত থাকে, তাই সে অবশ্যই দিনের বাকি সময় এবং সারা জীবন এগুলো থেকে বিরত থাকতে পারে, যদি সে সেগুলো পরিত্যাগ করার জন্য সত্যিকারের সংকল্প গ্রহণ করে, আল্লাহর উপর ভরসা করে, এবং সেই কুমন্ত্রণা ও ভয়কে দূর করে, যা তাকে কাজের সাথে কথাকে মিলিত করতে বাধা দেয়।

আল্লাহ বলেন:

“আর যারা আমাদের পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, আমরা তাদেরকে অবশ্যই আমাদের পথসমূহের হিদায়াত দিব। আর নিশ্চয় আল্লাহ্ মুহসিনদের সঙ্গে আছেন।”

(সূরা আল আনকাবুত:৬৯)


রামাদান আত্মসমালোচনা, তওবা ও ইস্তিগফার করার সুযোগ; কারণ পাপসমূহ বান্দা ও আনুগত্যের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করে, এবং বান্দাকে প্রতিটি কল্যাণ ও সৎকর্ম থেকে বিরত রাখে।

সফল ব্যক্তিরা তারাই, যারা এই মূল্যবান সুযোগকে কাজে লাগায়, যাতে এই মাস সঠিক পথে পরিবর্তনের এবং দৃঢ়তার একটি সুযোগ হয়, যার বৈশিষ্ট্য হলো: ধারাবাহিকতা, সংগ্রাম, ধৈর্য এবং সওয়াবের আশা।


সূত্র:
https://www.alukah.net/spotlight/0/134365/رمضان-نقطة-تحول-وموسم-تغيير/


রামাদানের প্রস্তুতির ধাপসমূহ:

১. সত্যিকার তওবা করা – আল্লাহর কাছে খাঁটি অন্তরে তওবা করা।

২. দোয়া করা – রামাদানকে ভালোভাবে পালন করার জন্য আল্লাহর সাহায্য চাওয়া।

৩. রামাদানের আগমনে আনন্দিত হওয়া – এই বরকতময় মাসকে পাওয়ার জন্য হৃদয়ে আনন্দ অনুভব করা।

৪. কাজা রোজা থাকলে তা রামাদানের আগে আদায় করা।

৫. সিয়ামের বিধান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা – রোজার সঠিক নিয়ম ও মাসআলা-মাসায়েল শেখা।

৬. রামাদানে ইবাদতে মনোযোগী হওয়ার জন্য অপ্রয়োজনীয় কাজ রামাদানের আগে শেষ করা – যেন কোনো কাজ ইবাদতের অন্তরায় না হয়। (যেমন আলমারি গোছানো, মাসের বাজার ইত্যাদি।)

৭. পরিবারের সদস্যদের রোজার বিধান সম্পর্কে জানানো – রোজার শারঈ বিধান ও করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা।

৮. উপকারী বই প্রস্তুত রাখা – রামাদানে পড়ার জন্য কিছু ইসলামিক বই সংগ্রহ করা।

৯. শাবান মাসে কিছু রোজা রাখা – রামাদানের জন্য নিজেকে অভ্যস্ত করা।

১০. কুরআন তিলাওয়াত করা – রামাদানের প্রস্তুতি হিসেবে বেশি বেশি কুরআন পড়া।

(সূত্র: islamqa.info)


মানুষের জীবন নিয়ে অতিরিক্ত কৌতূহল সরাতে চাইলে:

- এই বিষয়ে ইসলাম কী শিক্ষা দেয় তা নিয়ে পড়ালেখা করতে হবে।
- নিজের মাঝে এই খারাপ স্বভাব আছে কিনা ভাবতে হবে। সেক্ষেত্রে সেটা সরানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে এবং আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে।
- মানুষের সাথে অযথা মেলামেশা, ফোনে কথা, আড্ডা কমাতে হবে।
- কিছু মানুষ আছে যারা কথা চালাচালি করে। এদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।
- আমরা চাই না কেউ আমাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করুক। অন্যের জীবন নিয়ে তাহলে আমরা সেই একই কাজ কেন করবো?
- এমন ব্যক্তিত্ব অর্জন করতে হবে যেন অন্যরা এসে কথা কানে ঢালতে না পারে।
- যা কিছু কথা হেঁটে বেড়ায়, সবকিছু শোনামাত্র বিশ্বাস না করা এবং নিজে সেসব প্রচারে অংশ না নেয়া।
- একজন মুসলিমের জন্য অন্য মুসলিমের সম্মান, সম্পদ এবং জীবন হারাম। একথা স্মরণ রাখা।
- সব অযথা আচরণের হিসাব দিতে হবে। তাই এসব থেকে বিরত থাকার আড়ালে নিজেরই যে লাভ, সেটা অনুধাবন করা।

▫️▫️▫️▫️▫️▫️▫️

এই প্রসঙ্গে দুইটা হাদীস সাহায্য করতে পারে।

▫️আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্যের অংশ হলো, সে এমন বিষয় এড়িয়ে চলে যা তার জন্য প্রয়োজনীয় নয়।

~সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯৭৬)

ব্যাখ্যা:

রাসূল ﷺ উত্তম চরিত্রের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। তিনি খারাপ আচরণ থেকে সতর্ক করতেন এবং সেগুলোর নিন্দা করতেন। এই হাদিসে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: “কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্যের অংশ হলো, সে এমন বিষয় এড়িয়ে চলে যা তার জন্য প্রয়োজনীয় নয়।”

এর অর্থ হলো, একজন মুসলিমের ইসলামের সৌন্দর্য ও ঈমানের পরিপূর্ণতার মধ্যে অন্যতম লক্ষণ হলো, এমন কথা বা কাজ থেকে দূরে থাকা যা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, উপকারী নয় বা তার কোনো উপকারে আসবে না। এটি অন্যের ব্যক্তিগত ব্যাপারে অযথা হস্তক্ষেপ না করার এবং তুচ্ছ বিষয় নিয়ে না মাথা ঘামানোর নির্দেশ দেয়।

এখানে এমন বিষয় থেকেও দূরে থাকার ইঙ্গিত রয়েছে, যা আল্লাহ হারাম করেছেন বা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অপছন্দ করেছেন। একইভাবে, এমন কোনো অতিরিক্ত কথা, কাজ বা আচরণ এড়িয়ে চলাও অন্তর্ভুক্ত, যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয়।

এমন বিষয় শুধুমাত্র দুনিয়াবি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এতে এমন আখিরাত সংশ্লিষ্ট বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত, যেমন গায়েব বা অদৃশ্য জগতের বাস্তবতা নিয়ে অযথা খোঁজাখুঁজি করা বা সৃষ্টির গোপন রহস্য সম্পর্কে এমন প্রশ্ন করা, যা মানুষের জ্ঞানের বাইরে।

এই হাদিস থেকে শিক্ষা নেয়া যায় যে, একজন মুসলিমের উচিত এমন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা, যা তার দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর ও উপকারী।

▫️
অন্য হাদীসটি হলো:

আনাস (রা.) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেনঃ

"তোমাদের কেউ প্রকৃত মু‘মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে।"

(
সহীহ আল বুখারী: ১৩)

ব্যাখ্যা:

রাসূল ﷺ এর এই হাদিস-
ইসলামের চতুর্থাংশ এবং চারটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিসের অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো থেকে সকল উত্তম আদবের মূলনীতি উদ্ভূত হয়েছে। এখানে তিনি এই বার্তা দিয়েছেন যে, একজন মুসলিমের পূর্ণাঙ্গ ঈমান তখনই সম্পূর্ণ হয়, যখন সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে, তা তার মুসলিম ভাইয়ের জন্যও পছন্দ করে। এখানে ঈমানের অভাব বলতে মূল ঈমানের অভাব বোঝানো হয়নি; বরং পূর্ণাঙ্গ ঈমানের অভাব বোঝানো হয়েছে।

তাই, একজন মুসলিম তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণকর বিষয়গুলো কামনা করবে, তা দ্বীন-দুনিয়ার যেকোনো ভালো কাজ হোক। একইভাবে, যা তার নিজের জন্য অপছন্দনীয়, তা তার ভাইয়ের জন্যও অপছন্দ করবে। যদি সে তার মুসলিম ভাইয়ের মধ্যে দ্বীনের কোনো ঘাটতি দেখে, তবে তা সংশোধনের চেষ্টা করবে। আর যদি সে তার ভাইয়ের মধ্যে কোনো ভালো দিক দেখতে পায়, তবে তাকে সঠিক পথে স্থির থাকতে এবং সেই ভালো কাজ বাড়াতে সাহায্য করবে।

সত্যিকারের মুমিন তখনই হওয়া সম্ভব, যখন একজন মুমিন নিজের জন্য যা কামনা করে, তা অন্যদের জন্যও কামনা করে। এটি তখনই সম্ভব হয়, যখন কারো অন্তর হিংসা, বিদ্বেষ, ধোঁকাবাজি এবং ঈর্ষা থেকে মুক্ত থাকে। কারণ, ঈর্ষা একজন মানুষকে এই অনুভূতিতে পেয়ে বসে যে, অন্য কেউ তার থেকে ভালো অবস্থানে থাকবে বা সমান হবে, তা সে সহ্য করতে পারে না। সে চায়, ভালো দিকগুলোতে সে অন্য সবার চেয়ে আলাদা ও বিশেষ হয়ে থাকুক। অথচ ঈমান এর বিপরীত শিক্ষা দেয়; ঈমান বলে, একজন মুমিন তার ভাইদের সঙ্গে আল্লাহর দেওয়া কল্যাণে অংশীদার হতে চায়।
———

ব্যাখ্যার উৎস:

https://dorar.net/hadith/sharh/147242

https://dorar.net/hadith/sharh/7324


✔️ আদব অর্জনে সহায়ক কিছু উপায়:

▪️ ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের আদবের আলোকে গড়ে তোলা।
▪️ কুরআন ও সুন্নাহর আদর্শে নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য শুধরে নেয়া।
▪️ নবী, সাহাবি এবং তাদের পরবর্তী যুগের উলামাদের জীবনী অধ্যয়ন করা এবং তাদের অনুসরণ করা।
▪️ মানুষকে আদবের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া এবং তাদের এই বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেওয়া।
▪️ আদব মেনে চলার জন্য নিজের নফসের সঙ্গে সংগ্রাম করা।
▪️ আদবের কারণে প্রাপ্ত প্রতিদান সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা এবং বুঝা যে, এটি আল্লাহর নৈকট্য ও জান্নাত লাভের মাধ্যম।
▪️ আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করা এবং বেশি বেশি দোয়া করা।
▪️ আলেম ও নেককার ব্যক্তিদের সঙ্গ গ্রহণ করা, যারা ইসলামের আদব মেনে চলেন।


শা‘বী (রহ.) হতে বর্ণিত যে, মুগীরা ইবনু শু‘বাহ্ (রহ.)-এর কাতিব (একান্ত সচিব) বলেছেন, মু‘আবিয়া (রাঃ) মুগীরা ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ)-এর কাছে লিখে পাঠালেন যে, নবী ﷺ-এর কাছ হতে আপনি যা শুনেছেন তার কিছু আমাকে লিখে জানান। তিনি তাঁর কাছে লিখলেন, আমি আল্লাহর রাসূল ﷺ-কে বলতে শুনেছি,

“আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপছন্দ করেন- (১) অনর্থক কথাবার্তা, (২) সম্পদ নষ্ট করা এবং (৩) অত্যধিক সওয়াল করা।”

(সহীহ আল বুখারী ১৪৭৭)

ব্যাখ্যা*:

(১) অনর্থক কথাবার্তা- জরুরত নেই এমন কথা, এমন কিছু বর্ণনা করা যার সত্যতা নিয়ে জানা নেই, ক্ষতিকর কথা যার উপকার নেই।

(২) সম্পদ নষ্ট করা- অপচয় করা, অপাত্রে খরচ করা, শরিয়ত সম্মত নয় এমন বিষয়ে খরচ করা।

(৩) অত্যধিক সওয়াল করা- অকারণে মানুষের কাছে অর্থ সাহায্য চাওয়া, দুনিয়া/আখিরাতের বিষয়ে অযথা অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা, বিশেষ করে এমন জটিল বিষয় নিয়ে যা আমাদের বাহ্যিকভাবে ক্লান্ত করে তোলে। মানুষকে তাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে অযথা প্রশ্ন করে বিব্রত করা বা তাদের অসুবিধা তৈরি করা।

✉️

যারা দ্বীনের পথে অগ্রসর হতে চান, তাদের এই অভ্যাসগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করা উচিত, মন থেকে।

____
* https://dorar.net/hadith/sharh/3341#:~:text=أوَّلُها%3A%20«قيل%20وقال»،,الكلامُ%20فيما%20يضُرُّ%20ولا%20يَنفَعُ.


আরেকটা বিষয়- রেফারেন্স নাই এমন আজগুবি পোস্ট সঠিক কিনা এটা জানতে চাওয়া অনেক সময়ই সকলের সময় নষ্ট করে। যে জিনিস আছে, সেটা যে আছে- এটা খুঁজে পাওয়া সহজ। যা বানোয়াট, সেটা তো খুঁজে পাওয়া যায় না- হয় সেটা বানোয়াট হিসেবে চিহ্নিত (তখন পাওয়া যায়।) আর নয়ত সেটা নতুন আবিষ্কার (এক্ষেত্রে এটা যে বানোয়াট সেটা খুঁজে পেতে সময় লাগবে।) তাই রেফারেন্স নাই এমন পোস্ট এত দেখা আর "এটা কি সত্যি" নিয়ে সময় নষ্ট না করলেই ভালো।

কখনো কিছু বানোয়াট কথা ভাইরাল হয়ে যায় এবং সবাই ফলো করতে থাকে। সেরকম বুঝলে যারা এটা নিয়ে মানুষকে সচেতন করার যোগ্যতা রাখেন, তাদের দৃষ্টিগোচর করবেন বিষয়টা।


যেকোনো পোস্ট এ হাদীস থাকলে:

- রেফারেন্স দিয়েছে কিনা দেখবেন। না দিলে ওই পোস্ট শেয়ার দিবেন না। আমল ও দিবেন না ওটায়।

- রেফারেন্স দিলে কি শেয়ার দিবেন? না। সেক্ষেত্রে খুঁজে দেখবেন ওই রেফারেন্স এ হাদীসটি আছে কিনা, আর সেটা নিয়ে উলামাদের মন্তব্য কী। শুধু বুখারী/মুসলিম লেখা দেখাই যথেষ্ট নয়। সেসব বসিয়েও মিথ্যা হাদীস প্রচার করে মানুষ। গতকাল একটি পোস্টে নম্বর সহ বুখারীর হাদীস উল্লেখ করেছে। অথচ সেই হাদীস সহীহ বুখারীতে নেই। এবং হাদীসটি আসলে বানোয়াট হাদীস।

- তারপর দেখবেন যে, সেই হাদীসের ব্যাখ্যা কী? পোস্টে যা বললো সেটা আসলেই তাই কিনা।

- যদি সেটা খুঁজে পাওয়া যায়, ব্যাখ্যাটা সঠিক হয়, তখন শেয়ার দিবেন।

- রেফারেন্স থেকে হাদীসের সোর্স আর মান খুঁজতে হয় কিভাবে জানা না থাকলে- সেই পোস্টটি শেয়ার দিবেন না।

- যারা জানেন, তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করবেন।

-কারা জানেন এই নিয়ে? যারা হাদীস সাইন্স নিয়ে পড়েছেন। অথবা দ্বীন শিক্ষা করেছেন প্রপার সোর্স এ। অথবা সহিহ আকীদার আলেমগণ। (কেউ শুধু দ্বীনদার হলেই যে এসব বিষয় জানবেন এমন কোনো কথা নেই।

- সুন্দর পোস্ট/অনেক ভালো লাগে- এটা কোনো দলিল না একটা হাদিস গ্রহণযোগ্য হওয়ার অথবা একটা পোস্ট সঠিক হওয়ার।

- আপনার মাধ্যমে মানুষ একটি ভুল কথা জানার চাইতে, আপনি নিশ্চিত না হয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করবেন না- সেটাই সঠিক পন্থা হবে।


ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের ছেলেকে কুরবানী করার ঘটনা কার না ভালো লাগে। কী পরিমাণ নিষ্ঠা আল্লাহর প্রতি, যে তাঁর নির্দেশে প্রাণপ্রিয় সন্তানকে কুরবানী দেয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত হতে পারেন! আমাদের আবেগ এই কাহিনী শোনার সময় এমন থাকে যে এমন নির্দেশ আমাদের কাছে আসলে আমরাও দেখিয়ে দিতাম।

এই দেখুন, আবেগ খালি আমাদের কথাতেই। সন্তানকে কুরবানী দিতে হবে না। শুধু একটু ইন্টারনেট থেকে দূরে রাখব, হারাম থেকে, ফ্রি মিক্সিং থেকে- এই বেলায় আমরা "কী আর করবো" বলে পাশ কাটিয়ে পালিয়ে যাই। আমাদের ঈমানের অবস্থা ভাবুন। সন্তানকে আল্লাহর জন্য কুরবানী দেয়া তো পরের কথা, সন্তানকে আল্লাহর পথে হেফাজত করার নির্দেশ পালন করা আমাদের কী অসম্ভই না লাগে!


"আযান শুরু হয় ‘আল্লাহু আকবার‘* দিয়ে। আল্লাহ ﷻ এর পরিপূর্ণতা, তিনি ত্রুটির উর্ধ্বে- এই ঘোষণার মাধ্যমে।

তারপর আযানের বাণীতে আসে আল্লাহর একত্ববাদ এর ঘোষণা, তাওহীদ এর কথা। অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। শাহাদাতের প্রথম অংশ। এই সাক্ষ্য হচ্ছে ঈমানের মূল ভিত্তি এবং দ্বীনের আর সব বিষয়ের পূর্বে আসে তাওহীদ।

তারপর আসে শাহাদাতের দ্বিতীয় অংশ, যা প্রথম অংশকে পূরণ করে। এর দ্বারা আল্লাহর রাসূল ﷺ এর উপর, তার নবুয়্যাতের উপর ঈমানের ঘোষণা দেয়া হয়। এই দুই শাহাদাতের মাধ্যমে মানুষ ঈমানে প্রবেশ করে।

যখন এই সাক্ষ্য দেয়া হয়, তারপর সালাতের দিকে ডাকা হয়। সালাতের কথা শাহাদাতের পর আসে এই জন্য যে, ঈমান না এনে সালাত এবং অন্য যেকোনো আমল গ্রহণযোগ্য নয়।

তারপর ডাকা হয় সাফল্যের দিকে - দুনিয়া ও আখিরাতের।

~ موسوعة أحكام الصلوات الخمس - الشيخ دبيان بن محمد الدبيان
(পৃষ্ঠা ৪০-৪১, ভলিউম ১)

আমরা আযান শুনি, অনেকে উত্তরও দেই। কথাগুলোর অর্থ কী গভীর সেটা কি খেয়াল করি?
----------------
*আল্লাহু আকবার (اللَّهُ أَكْبَرُ) অর্থ হচ্ছে, হাক্বীকত এবং আক্ষরিক অর্থে আল্লাহ তাআ’লা সমস্ত কিছুর চেয়ে বড় এবং মহান।
~ শায়খ মুহাম্মদ বিন সলিহ আল উসাইমীন রহিমাহুল্লাহ


অন্যের জীবনের নিয়ামত কী কী খুঁজে বের না করার অভ্যাস করুন। কার কী আছে, কে কত ভালো আছে- কী দরকার জেনে? যে যেমনই আছে, হায়াতুদ দুনিয়ার জ্বালা যন্ত্রণা নিয়েই আছে। দুইটা মানুষের নিয়ামত এক রকম হয়না, জীবনের পরীক্ষা গুলোও তো ভিন্ন হয়। শুধু শুধু তুলনা করে কেন নিজে কষ্ট পাওয়া আর অন্যকে নিজের হিংসা দিয়ে আঘাত করা? বরং নিজের জীবনে কী কী নিয়ামত আছে খুঁজুন। তাহলে মন থেকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আসবে ইন শা আল্লাহ।


মুসলিম হিসেবে আমাদের কাছে প্রতিটা দিন গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটা দিন নিজেকে উন্নত করার সুযোগ। আর প্রতি বছর ঘুরে আসে এরকম উৎসব আমাদের শুধু দুইটা- দুই ঈদ। এর বাইরে যা কিছু ঘুরে ঘুরে আসছে, বছরের শুরু, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, মৃত্যুদিবস, সব মূল্যহীন। এসব করার মাঝে কাফিরদের অনুসরণ ও আছে। আর করার সময় যেই গুনাহ গুলো হয় সেসব তো আছেই।(এই অনুষ্ঠান গুলো করা হারাম)

"পালন করি না শুধু উইশ করি":

কোনো কিছুতে "উইশ" করা মানে সেটা সমর্থন করা। আর "উইশ" করা মানে কী?

এগুলো শুধু কথার কথা না যা কেউ বলে চলে যায়। এগুলো কোনো বিশেষ দিন/কালচার কে বৈধতা দেয়। সেই আইডিয়াকে সমর্থন করে। যেই আইডিয়ার সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। সেই কালচার যার উৎপত্তি অন্য ধর্ম। (তাই এসবে উইশ করাও হারাম)

মানুষ মাইন্ড করবে:
করুক। কিয়ামতের দিন তো মা পর্যন্ত বাচ্চাকে দেখবে না। এরা কেউ সেদিন কোনো কাজে আসবে না। তাহলে শুধু শুধু তাদের "মাইন্ড" ভেবে আখিরাতের ক্ষতি কেন করবো?

অন্যভাবে ভাবুন:
নতুন বছর শুরু হলে কী হয়? কিছুই হয়না। জীবনের একটা দিন মাত্র। যা আসে আর দ্রুত শেষ হয়ে যায়। এত দ্রুত, যে কবে গত বছর শেষ হয়ে এই বছর এসেছিল, আর শেষ ও হয়ে গেল মনে পড়ছে না। এভাবে আমাদের জীবনটাই শেষ হয়ে যাবে, যেই জীবনের সৃষ্টি হয়েছিল শুধু আল্লাহর ইবাদত করার জন্য। গুনাহের কাজে, ভুল কাজে, কাফিরদের অনুসরণে, হারাম কাজে কাটানোর মত সময় আমাদের সত্যিই নেই। সময় সুযোগ থাকতেই আমরা যেন সেকথা বুঝতে পারি।


গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটি হিন্দুদের বিয়ের এমন একটি অনুষ্ঠান যার সাথে ধর্মীয় বিষয়বস্তু জড়িত। এটা জানার পরও সেসব অনুষ্ঠানে কেন যায় কেউ? আত্মীয়রা কী মনে করবেন, তাই। এই আত্মীয়রা কিয়ামতের দিন পাশে থাকবে না।

পর্দা নিয়ে একজন মুরুব্বী বকা দিচ্ছেন ছোট একটা মেয়েকে। এত পর্দার কী দরকার? তারপর বলছেন "আমরা চাইলেও পারবো না- সবাই কী মনে করবে?"
এই "সবাই" কিয়ামতের দিন পাশে থাকবে না।

জন্মদিন পালনের উৎপত্তি অন্য ধর্মে। জেনেও উইশ করছেন কেউ। নাহলে কী মনে করবে?

বিভিন্ন "দিবস" পালন ইসলামের সাথে যায় না।তারপরও সেসব দিনের নির্ধারিত রঙগুলো পরছেন কেউ। সবাই নাহলে কী মনে করবে? এই সবাই কিয়ামতের দিন পাশে থাকবে না।

কখনো যদি "সবাই" কে প্রাধান্য না দিয়ে আমরা "আল্লাহ আমাকে দেখছেন" - এটাকে প্রাধান্য দেই? দেখবো এই বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকা সহজ হচ্ছে ইন শা আল্লাহ ।

‘আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন:

“যে ব্যক্তি মানুষকে অসন্তুষ্ট করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, মহান আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান এবং মানুষকেও তার প্রতি সন্তুষ্ট করে দেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে মানুষের সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, মহান আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে যান এবং মানুষকেও তার প্রতি অসন্তুষ্ট করে দেন।”

(সহীহ ইবন হিব্বান, ভলিউম ২, হাদীস ২৭৬। শায়খ আলবানির মতে হাদীসটি সহীহ।)


কেউ বলছে আল্লাহর ছেলে আছে, আর আপনি তাকে তার অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এটা আপনার কাছে উদারতা? আর আল্লাহ, যিনি সমস্ত ত্রুটি আর দুর্বলতার উর্দ্ধে, তাঁকে নিয়ে এমন একটা কথা আপনার গায়ে লাগলো না। নিজেকে "উদার" দেখাতে যেয়ে, নিজের ঈমান বিক্রি করে দিলেন।

মুসলিম হওয়া মানেই শিরক থেকে দূরে থাকা- একমাত্র আল্লাহই রব- এটা অন্তর দিয়ে, কথা দিয়ে, কাজ দিয়ে মানা। মানা তিনি ছাড়া আর কোনো সত্য উপাস্য নেই। এখন ওরা মানে যে আল্লাহর সন্তান আছে- আপনি মানেন না সেটা, খালি ওদের এই মানাটায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন- এই কথাটার কোনো মানে আছে?

মুসলিমদের নিজের মত চলার উপায় নেই- চলার কথা আল্লাহর মত। আর আল্লাহ এই বিষয়টি নিয়ে বলেছেন:

"আর তারা বলে, ‘দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন।’

তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করছ;

যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাবার উপক্রম হয়, আর যমীন খণ্ড-বিখণ্ড হবে এবং পর্বতমণ্ডলী চুর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে"


(সূরা মারিয়াম: ৮৮-৯০)

এখন ক্রিসমাস উইশ করে, সেইসব ফটোতে লাইক দিয়ে, লাভ দিয়ে, উদারতা দেখাতে প্রয়োজনে বাসাটা ক্রিসমাসের জন্য সাজিয়ে, সন্তানকে ক্রিসমাসের "কালচার" শিখিয়ে আপনি সেটা করছেন যার কারণে আসমান জমিন বিদীর্ণ হওয়ার উপক্রম হয়। অথচ আপনার "নামে মুসলিম" হৃদয় একটু কাঁপেও না।

এরপরও নিজেকে বলবেন যে আপনি মুসলিম, মুমিন, আর ঈদের সময় ঈদও করবেন, পূজার সময় পূজা।

আল্লাহ কি আপনার প্রাইভেট প্রপার্টি নাকি যে যা বলবেন সেটাই "ইসলাম" হতে হবে? ঈমান আছে এই দাবি যদি থাকে- তাহলে চেষ্টা করুন নিজেকে আর নিজের পরিবারকে এই সমস্ত শিরক, কুফরী থেকে দূরে রাখতে।

-জানা নেই কোনটা শিরক?
জানুন!

-আর ইসলাম এত কঠিন না?
না ভাই, আপনার কথায় তো ইসলাম চলে না। চলে আল্লাহ আর আল্লাহর রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায়। কুরআন সুন্নাহ থেকে এনে দেখাবেন কোথায় অন্য ধর্মের কালচার/উৎসব করতে ইসলাম উৎসাহিত করেছে। পাবেন না। নিষেধই করেছে। বার বার। সেটাই পাবেন।

অনেক তো হলো। এবার ছেড়ে দিন শিরক আর কুফরীর সাথে একাত্মতা। আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করতে দেখেও বুক ভেঙে যায় না- কেমন মুসলিম আপনি?

(ডিসেম্বর ২০২২)


আপনার ব্র্যান্ড কী?

যেদিন জন্মেছিলেন, সেদিন আপনার আর আরেকজন এর মাঝে পার্থক্য এটাই ছিল যে আল্লাহ যার জন্য যেই পরিবার চেয়েছেন, দিয়েছেন।

যেদিন মারা যাবেন, কবরটা "কো...." বা "............" বা অন্য কোনো ব্র্যান্ড এর হবে না। একটাই ব্র্যান্ড তখন: মাটি ব্র্যান্ড। আপনার, আপনার উপরের এবং নিচের সব লেভেলের মানুষের জন্য একই। কারো কবর যদি ব্র্যান্ডেড হতও, তাহলেও তাতে তার কোনো উপকার হত না। এটা তার স্ট্যাটাস আল্লাহর সামনে বৃদ্ধি করতো না।

তাই এই জন্ম আর মৃত্যুর মাঝে যেই জীবন, এটাতে শো অফ এর ধোঁকায় পড়বেন না। আল্লাহ সামর্থ্য দিলে ইসলামের সীমায় থেকে যা কেনা হালাল কিনুন। কিন্তু এগুলো যেন জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত না হয়- যা দিয়ে নিজের জীবন শো অফ করবেন আর অন্যের জীবন মূল্যায়ণ করবেন।

নিজের "worth" প্রমাণ করতে যদি আপনার "ব্র্যান্ডেড" জিনিস "দেখানো" লাগে, তারমানে আপনার নিজের কাছে নিজের "worth" নাই। তাই এসব তুচ্ছ বিষয় নিয়ে নিজের দাম বাড়ানো লাগছে। অন্যের কাছে নিজেকে "validate" করা লাগছে। এই চক্রের কোনো শেষ নাই। পৃথিবীর সব ব্র্যান্ড কিনে ফেললেও অন্য কারো কাছে সবসময়ই আপনার চাইতে বেশি থাকবে। আর যদি আপনার সবার চাইতে বেশি থাকে সব জিনিস, সেটাও আল্লাহর চোখে আপনাকে আলাদা মর্যাদা দিবে না।

নিজেদের, আর সন্তানদের- ব্র্যান্ড কে বড় করে দেখার অভ্যাস করা থেকে হেফাজত করুন। দিন শেষে এর থেকে হয় অহংকার আসবে, নয়ত অন্তরের অশান্তি। আর শেষ পর্যন্ত কার তাকওয়া বেশি, সেটাই ম্যাটার করবে আল্লাহর কাছে।

--------

(অনেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো জিনিস ব্যবহার করেন। তাতেই তাদেরকে অহংকারী ভাবারও প্রয়োজন নেই। ভালো কিছু ব্যবহার করা মানেই শো অফ না। ভালো কিছু ব্যবহার করে নিজেকে "উপরের স্তরের" ভাবাটা হলো সমস্যা। মোট কথা এটা অন্যকে বিচার করার পোস্ট না। নিজে সতর্ক হওয়ার পোস্ট।)


প্রচণ্ড গরম আর প্রচণ্ড শীত- জাহান্নামের শাস্তির মাঝে দুইটা। কষ্টকর বিষয়। এই পৃথিবীর জীবনেও, তার চাইতে হয়তবা অকল্পনীয় মাত্রায় কম গরম অথবা ঠান্ডায়, আমাদের কষ্ট হয়। তারপর আমরা এসব কথা বলছি আল্লাহর অশেষ রহমতে মাথার উপর ছাদ আছে এমন অবস্থায়। এই নিয়ামত অনুধাবন করা আর এর শুকরিয়া আদায় করা- কোনোটাই আমরা ঠিকমত করতে পারি না।

সবাই বলে, ঠান্ডা কবে আসবে। যেন পিকনিক। ওদিকে গাজা, সিরিয়া, এবং মাথার উপর ছাদ নাই এমন সমস্ত স্থানের মুসলিম ভাই/বোনদের জীবন এই সময় কেমন হয় আমরা হয়ত কল্পনা করতে পারি না। সেসব থাক, আমাদের যার যার গ্রামের অবস্থাই আমরা কল্পনা করতে পারি না। আল্লাহ আরহামুর রাহিমিন। আল্লাহ যেন তাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।

আল্লাহই তাদের জন্য যথেষ্ট।

তারপরও, অসহায় ভাই বোনদের স্মরণ রেখে, সবাই যেন সাধ্যমত এই শীতে তাদেরকে সাহায্য করি। গরম পানি, কম্বল আর ছাদের নিয়ামতে ডুবে ভুলে না যাই যে এসব আমাদের প্রাপ্য না। এই সবই আল্লাহর রহমত যা আমাদের জন্য নাও থাকতে পারতো। আমরা যেন আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হতে চেষ্টা করি।


“তাঁর কাছে হাত তুলুন (দোয়া করুন),
তা কখনোই খালি ফিরে আসবে না,
কারণ আপনি সেই সত্তার কাছে প্রার্থনা করছেন,
যিনি শূন্যতা থেকে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।”

~ একটি আরবি কবিতা থেকে নেয়া


“আল্লাহ কোনো বিষয় দেরি করিয়ে দেন, যা (যার হিকমাহ) আপনি জানেন না।

যদি গায়েবের বিষয় প্রকাশ পেত, তবে আপনি সেটাই বেছে নিতেন যা আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন।

~ একটি আরবি কবিতা থেকে নেয়া


"তিনি বললেন, ‘আমি আমার অসহনীয় বেদনা, আমার দুঃখ শুধু আল্লাহর কাছেই নিবেদন করছি এবং আমি আল্লাহর কাছ থেকে তা জানি যা তোমরা জান না।"

{সূরা ইউসূফ: ৮৬}

▫️ আল্লাহর কাছে দুঃখ নিবেদন করা ধৈর্যের বিপরীত নয়, বরং ধৈর্যের বিপরীত হলো মানুষের কাছে অভিযোগ করা।▫️

🖊 আস-সা’দি




প্রশ্ন: অনেকে বলেন মানুষকে সৎকাজে আদেশ আর মন্দ কাজে নিষেধ করা অনর্থক নাক গলানো, অন্যের জীবনে। তাই কি? কারণ হাদীসে এসেছে:

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অনর্থক আচরণ ত্যাগ করা।
(আত তিরমিযী)

উত্তর: না। যখন শরিয়তের বিধান নিয়ে কথা হয়, সেটা অনর্থক আচরণ না। সেটা অবশ্যই আমাদের "কনসার্ন"। আমরা ভুল দেখলে, প্রতিহত করতে হবে।

আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন:

“তোমাদের মধ্যে যে অন্যায় দেখবে সে যেন তা তার হাত দিয়ে বাধা দেয় আর যদি হাত দিয়ে বাধা না দিতে পারে তবে যেন মুখ দিয়ে বাধা দেয়, আর যদি মুখ দিয়ে বাধা না দিতে পারে তবে যেন অন্তর দিয়ে বাধা দেয়, আর এটি হলো দুর্বল ঈমানের পরিচয়।”

(সহীহ মুসলিম: ৪৯)

বরং প্রশ্ন করা হবে সেই ভুলের জন্য যা চোখের সামনে সংঘটিত হয়েছে এবং তা প্রতিহত করার চেষ্টা করা হ‍য়নি।

~ শায়খ আব্দুল করিম আল খুদাইর হাফিজাহুল্লাহ এর লেকচার থেকে, সারমর্ম অনুবাদ করা হয়েছে।

https://t.me/A_Alkhudhair/20041

Показано 20 последних публикаций.