আমাদের নববর্ষ ❤
"পয়লা বৈশাখ " বা " নববর্ষ " প্রত্যেকটি বাঙালির আবেগ, ভালোবাসা, ঐতিহ্য রয়েছে অনেকটা জুড়ে। নববর্ষ মানে ' নতুনের ছোঁয়া ', নববর্ষ মানে নতুন জামা, পাত পেড়ে খাওয়া, আর সন্ধ্যায় সেজে গুজে হালখাতা করতে যাওয়া। তবে আমার মতো অত্যন্ত সাধারণ একটি মেয়ের এই বিলাসিতা করার মত সামর্থ ছিলো না। প্রত্যেক নববর্ষ এর আগে দেখতাম মা আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে সংসার খরচের টাকা থেকে অল্প অল্প করে জমিয়ে রাখা টাকাটা বাবার হাতে তুলে দিতেন আমার জন্য যাতে নতুন একটি জামা কিনে আনতে পারেন। অথচ বাবার শার্টটাও ছিড়ে গেছে, আর মায়ের কথা না হয় নাই বা বললাম....🍂। কিন্তু তবুও কষ্ট করে হলেও আমার মুখে একটু হাসি ফোটানোর জন্য ওনারা কি না করতেন, ওই জন্যই বলে " বাবা মায়ের মত কেউ কখনও ভালোবাসতে পারে না😌, তাঁদের মতো কেউ আগলে রাখতে পারে না❤।"
' আমি, বাবা, আর মা
আমাদের ছোট্ট সুখের সংসার!
আমার আমি বড্ড দামি
বাবা আমার হৃদপিণ্ড....
আর মা?
মা তো নিশ্বাস ।।'🍁
তাই কোন এক নববর্ষেই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে আমার " ভালো থাকার" মানুষ দুটোকে ভালো রাখব। ভগবানও হয়তো আমাকে সহযোগীতা করতে চেয়েছিলেন, তাই আজ আমি 'প্রতিষ্ঠিত ' হতে পেরেছি। ওহ দাঁড়ান আমার পরিচয়টা আপনাদের দেই, দেখেছেন তো আপনাদের সাথে গল্প করতে করতে ভুলেই গেছিলাম,- আমি বৃষ্টিস্নাতা সেন, বর্তমানে আমি একটি কর্পোরেট সেক্টরের কর্মরতা, আমার বাবা- বিলাস সেন, মা- রিতা সেন।
নববর্ষের সকাল-
মা, বাবা, এদিকে এসো প্লিজ, বাবা এসে বলল কি হয়েছে ' মা' ? আর এই ডাকটা শুনলেই মনে হয় আমি সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি। মা ও এসে বলল কি হয়েছে বৃষ্টি? আমি মা বাবার হাতে দুটো ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বললাম চটপট রেডি হয়ে নাও, আজ আমরা সারাদিন বাইরে কাটাবো। তখনি বাবা মা বলে উঠলেন আমরা কেন রে, তুই ঘুরে আয় তর বন্ধু দের সাথে।আমি বললাম তোমরা অনেক কষ্ট করেছ তবুও আমাকে কোন দিন বুঝতে দাওনি, যখন যা চেয়েছি সামর্থ অনুযায়ী আমার হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছ। আমার কি ইচ্ছে করে না, তোমাদের সাথে আনন্দ করে সময় কাটতে? বলেই তাদের তাড়াতাড়ি রেডি হতে পাঠালাম, আর আমিও রেডি হয়ে এলাম। তারপর আমরা তিনজন মিলে প্রথমে গেলাম মন্দিরে, ঠাকুরের কাছে পুজো দিয়ে দিনটা শুরু করলাম। তারপর আমরা গেলাম এক আশ্রমের উদ্দেশ্যে, অবশ্য এই ভাবনাটা আমার বাবার 😌, বাবা চেয়েছিলেন ওই ছোট ছোট নিষ্পাপ শিশু গুলো ও দিদা দাদুদের সাথে আজকের আনন্দটা ভাগ করে নিতে, যাদের পরিবার থেকেও নেই। যাইহোক নববর্ষের দিনটা আমরা তাদের সাথে দুপুরে একসাথে খাবার খেয়ে হৈচৈ করে কাটালাম। ওই একটি নতুন জামা আর এই আনন্দ টা তাদের মুখের হাসি তেই বোঝা যাচ্ছিল যে, তারা কতটা খুশি হয়েছিলেন। আমরাও অনেক খুশি হয়েছিলাম, বাবারাই বোধহয় এমন করে ভাবতে পারেন😌❤। তারপর আমরা ওনাদের পা ছুঁয়ে প্রণাম করে, আসি বলে বেরিয়ে এলাম, সকলকে কথা দিয়ে এলাম আবার যাব বলে। বেরিয়ে দেখি হাল্কা হাল্কা হাওয়া দিচ্ছে, 🍂 মনোরম পরিবেশ। বাবা মাকে বললাম চল একটু হেঁটে যাই, ওনারাও হ্যাঁ বললেন। আমি দুজনের মাঝে দাঁড়িয়ে দুজনের হাত ধরলাম ছোটবেলার মতো, ওনারা দুজন আমার দিকে তাকিয়ে সুন্দর একটা হাসি দিলেন আর আমিও খিল খিল করে হেসে উঠলাম। আর সাথে মনোরম হাওয়া বইছে🍂, তখনই বাবা গলা ছেড়ে গেয়ে উঠলেন-
" এসো হে বৈশাখ
এসো এসো
তাপনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষু রে দাও উড়ায়ে
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক।।"
আমি আর মা ও গলা মেলালাম বাবার সাথে।🌻😌
📝কলমে : তৃষুদি 🦋🌻✨
🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸
#shortstory
"পয়লা বৈশাখ " বা " নববর্ষ " প্রত্যেকটি বাঙালির আবেগ, ভালোবাসা, ঐতিহ্য রয়েছে অনেকটা জুড়ে। নববর্ষ মানে ' নতুনের ছোঁয়া ', নববর্ষ মানে নতুন জামা, পাত পেড়ে খাওয়া, আর সন্ধ্যায় সেজে গুজে হালখাতা করতে যাওয়া। তবে আমার মতো অত্যন্ত সাধারণ একটি মেয়ের এই বিলাসিতা করার মত সামর্থ ছিলো না। প্রত্যেক নববর্ষ এর আগে দেখতাম মা আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে সংসার খরচের টাকা থেকে অল্প অল্প করে জমিয়ে রাখা টাকাটা বাবার হাতে তুলে দিতেন আমার জন্য যাতে নতুন একটি জামা কিনে আনতে পারেন। অথচ বাবার শার্টটাও ছিড়ে গেছে, আর মায়ের কথা না হয় নাই বা বললাম....🍂। কিন্তু তবুও কষ্ট করে হলেও আমার মুখে একটু হাসি ফোটানোর জন্য ওনারা কি না করতেন, ওই জন্যই বলে " বাবা মায়ের মত কেউ কখনও ভালোবাসতে পারে না😌, তাঁদের মতো কেউ আগলে রাখতে পারে না❤।"
' আমি, বাবা, আর মা
আমাদের ছোট্ট সুখের সংসার!
আমার আমি বড্ড দামি
বাবা আমার হৃদপিণ্ড....
আর মা?
মা তো নিশ্বাস ।।'🍁
তাই কোন এক নববর্ষেই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে আমার " ভালো থাকার" মানুষ দুটোকে ভালো রাখব। ভগবানও হয়তো আমাকে সহযোগীতা করতে চেয়েছিলেন, তাই আজ আমি 'প্রতিষ্ঠিত ' হতে পেরেছি। ওহ দাঁড়ান আমার পরিচয়টা আপনাদের দেই, দেখেছেন তো আপনাদের সাথে গল্প করতে করতে ভুলেই গেছিলাম,- আমি বৃষ্টিস্নাতা সেন, বর্তমানে আমি একটি কর্পোরেট সেক্টরের কর্মরতা, আমার বাবা- বিলাস সেন, মা- রিতা সেন।
নববর্ষের সকাল-
মা, বাবা, এদিকে এসো প্লিজ, বাবা এসে বলল কি হয়েছে ' মা' ? আর এই ডাকটা শুনলেই মনে হয় আমি সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি। মা ও এসে বলল কি হয়েছে বৃষ্টি? আমি মা বাবার হাতে দুটো ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বললাম চটপট রেডি হয়ে নাও, আজ আমরা সারাদিন বাইরে কাটাবো। তখনি বাবা মা বলে উঠলেন আমরা কেন রে, তুই ঘুরে আয় তর বন্ধু দের সাথে।আমি বললাম তোমরা অনেক কষ্ট করেছ তবুও আমাকে কোন দিন বুঝতে দাওনি, যখন যা চেয়েছি সামর্থ অনুযায়ী আমার হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছ। আমার কি ইচ্ছে করে না, তোমাদের সাথে আনন্দ করে সময় কাটতে? বলেই তাদের তাড়াতাড়ি রেডি হতে পাঠালাম, আর আমিও রেডি হয়ে এলাম। তারপর আমরা তিনজন মিলে প্রথমে গেলাম মন্দিরে, ঠাকুরের কাছে পুজো দিয়ে দিনটা শুরু করলাম। তারপর আমরা গেলাম এক আশ্রমের উদ্দেশ্যে, অবশ্য এই ভাবনাটা আমার বাবার 😌, বাবা চেয়েছিলেন ওই ছোট ছোট নিষ্পাপ শিশু গুলো ও দিদা দাদুদের সাথে আজকের আনন্দটা ভাগ করে নিতে, যাদের পরিবার থেকেও নেই। যাইহোক নববর্ষের দিনটা আমরা তাদের সাথে দুপুরে একসাথে খাবার খেয়ে হৈচৈ করে কাটালাম। ওই একটি নতুন জামা আর এই আনন্দ টা তাদের মুখের হাসি তেই বোঝা যাচ্ছিল যে, তারা কতটা খুশি হয়েছিলেন। আমরাও অনেক খুশি হয়েছিলাম, বাবারাই বোধহয় এমন করে ভাবতে পারেন😌❤। তারপর আমরা ওনাদের পা ছুঁয়ে প্রণাম করে, আসি বলে বেরিয়ে এলাম, সকলকে কথা দিয়ে এলাম আবার যাব বলে। বেরিয়ে দেখি হাল্কা হাল্কা হাওয়া দিচ্ছে, 🍂 মনোরম পরিবেশ। বাবা মাকে বললাম চল একটু হেঁটে যাই, ওনারাও হ্যাঁ বললেন। আমি দুজনের মাঝে দাঁড়িয়ে দুজনের হাত ধরলাম ছোটবেলার মতো, ওনারা দুজন আমার দিকে তাকিয়ে সুন্দর একটা হাসি দিলেন আর আমিও খিল খিল করে হেসে উঠলাম। আর সাথে মনোরম হাওয়া বইছে🍂, তখনই বাবা গলা ছেড়ে গেয়ে উঠলেন-
" এসো হে বৈশাখ
এসো এসো
তাপনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষু রে দাও উড়ায়ে
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক।।"
আমি আর মা ও গলা মেলালাম বাবার সাথে।🌻😌
📝কলমে : তৃষুদি 🦋🌻✨
🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸
#shortstory