(৫ম পর্ব)
ডঃ বসু নিবেদিতার থেকে বয়সে বড় ছিলেন; এর জন্য নিবেদিতাও তাঁকে
খুব শ্রদ্ধা ও সম্মানের চোখে দেখতেন। তিনি ডঃ বসুকে সাধারণত ‘ম্যান অব
সায়েন্স' বলে অভিহিত করতেন, তবে তাঁর ডায়েরী এবং চিঠিপত্রে অনেকবার
তাঁর উদ্দেশে তিনি 'Bairn' শব্দ ব্যবহার করেছেন। স্কটিশ 'Bairn' শব্দের অর্থ—
খোকা। এর কারণ ছিল—সামান্য বাধা বা কোন বিপদের সম্মুখীন হলে তিনি
হতাশ ও অবসন্ন বোধ করতেন। তখন নিবেদিতা মায়ের মতো স্নেহ, উৎসাহ ও
প্রেরণা দিয়ে তাঁকে উদ্যমশীল করে তুলতেন। এ-বিষয়ে ডঃ বসুও বলেছেন:
“হতাশ ও অবসন্ন বোধ করিলে আমি নিবেদিতার নিকট আশ্রয় লইতাম।” তাঁর
এই শিশুসুলভ স্বভাবের জন্য নিবেদিতা তাঁকে মাতৃস্নেহ দিয়ে রক্ষা করেছিলেন।
বলতে গেলে নিবেদিতা এবং ডঃ বসুর পারস্পরিক সাক্ষাতের সময় (১৮৯৯-
১৯১১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) মাত্র বারো বছর। কিন্তু সময়ের পরিধির ব্যাপ্তি স্বল্পকাল
হলেও ডঃ বসুর দীর্ঘকালের বিজ্ঞানসাধনার জীবনে এর প্রভাব ছিল সুগভীর
এবং অপরিসীম। অধ্যাপক গেডিজ ডঃ বসুর জীবনীতে লিখেছেন: “ডক্টর বসুর
নূতন আবিষ্কারগুলি সম্বন্ধে অপরের প্রত্যয় জন্মাইবার পক্ষে বহু বাধা ছিল;
ঐ সকল বাধা দূর করিবার জন্য ব্যক্তিগতভাবে নিবেদিতা সর্বপ্রকার সাহায্য
করিয়াছিলেন।” তাঁর সর্বাপেক্ষা কঠিন সংগ্রামের সময় নিবেদিতা তাঁকে কিভাবে
অযাচিত ও অনলসভাবে সাহায্য করেছিলেন সে-কথা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে
লেখা ডঃ বসুর পত্রগুলি প্রমাণ করে। এই সকল কথা স্মরণ করে রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর ১৯৩৭-এ ডঃ জগদীশচন্দ্র বসুর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর কথাপ্রসঙ্গে
বলেছিলেন : “এই সময়ে তাঁর কাজে ও রচনায় উৎসাহদাত্রীরূপে মূল্যবান সহায়
তিনি পেয়েছিলেন ভগিনী নিবেদিতাকে। জগদীশচন্দ্রের জীবনের ইতিহাসে এই
মহনীয়া নারীর নাম সম্মানের সঙ্গে রক্ষার যোগ্য।”
১৯০০ খ্রিস্টাব্দে প্যারিস প্রদর্শনী এবং একটি ‘ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস
অব ফিজিক্স' আয়োজিত হয়েছিল, যেখানে ডঃ বসু তাঁর নতুন আবিষ্কার
‘রেসপন্স অব ইনঅরগ্যানিক অ্যান্ড লিভিং ম্যাটার' বিষয়ে আলোচনা
করেছিলেন। সেই সময় স্বামীজী এবং নিবেদিতা উভয়েই উপস্থিত ছিলেন।
ডঃ বসুর কৃতিত্বে তাঁরা অত্যন্ত আনন্দ ও গর্ববোধ করেন। এরপরেই ডঃ
বসু ইংল্যান্ডে চলে যান। কিছুদিন পরে ভগিনী নিবেদিতাও ইংল্যান্ডে ফিরে
গিয়েছিলেন। সেই সময় ডঃ বসু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং
তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। তারপর নিবেদিতা তাঁকে উইম্বলডনে তাঁর
মায়ের কাছে রেখে সুস্থ করে তোলেন।
ডঃ বসু নিবেদিতার থেকে বয়সে বড় ছিলেন; এর জন্য নিবেদিতাও তাঁকে
খুব শ্রদ্ধা ও সম্মানের চোখে দেখতেন। তিনি ডঃ বসুকে সাধারণত ‘ম্যান অব
সায়েন্স' বলে অভিহিত করতেন, তবে তাঁর ডায়েরী এবং চিঠিপত্রে অনেকবার
তাঁর উদ্দেশে তিনি 'Bairn' শব্দ ব্যবহার করেছেন। স্কটিশ 'Bairn' শব্দের অর্থ—
খোকা। এর কারণ ছিল—সামান্য বাধা বা কোন বিপদের সম্মুখীন হলে তিনি
হতাশ ও অবসন্ন বোধ করতেন। তখন নিবেদিতা মায়ের মতো স্নেহ, উৎসাহ ও
প্রেরণা দিয়ে তাঁকে উদ্যমশীল করে তুলতেন। এ-বিষয়ে ডঃ বসুও বলেছেন:
“হতাশ ও অবসন্ন বোধ করিলে আমি নিবেদিতার নিকট আশ্রয় লইতাম।” তাঁর
এই শিশুসুলভ স্বভাবের জন্য নিবেদিতা তাঁকে মাতৃস্নেহ দিয়ে রক্ষা করেছিলেন।
বলতে গেলে নিবেদিতা এবং ডঃ বসুর পারস্পরিক সাক্ষাতের সময় (১৮৯৯-
১৯১১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) মাত্র বারো বছর। কিন্তু সময়ের পরিধির ব্যাপ্তি স্বল্পকাল
হলেও ডঃ বসুর দীর্ঘকালের বিজ্ঞানসাধনার জীবনে এর প্রভাব ছিল সুগভীর
এবং অপরিসীম। অধ্যাপক গেডিজ ডঃ বসুর জীবনীতে লিখেছেন: “ডক্টর বসুর
নূতন আবিষ্কারগুলি সম্বন্ধে অপরের প্রত্যয় জন্মাইবার পক্ষে বহু বাধা ছিল;
ঐ সকল বাধা দূর করিবার জন্য ব্যক্তিগতভাবে নিবেদিতা সর্বপ্রকার সাহায্য
করিয়াছিলেন।” তাঁর সর্বাপেক্ষা কঠিন সংগ্রামের সময় নিবেদিতা তাঁকে কিভাবে
অযাচিত ও অনলসভাবে সাহায্য করেছিলেন সে-কথা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে
লেখা ডঃ বসুর পত্রগুলি প্রমাণ করে। এই সকল কথা স্মরণ করে রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর ১৯৩৭-এ ডঃ জগদীশচন্দ্র বসুর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর কথাপ্রসঙ্গে
বলেছিলেন : “এই সময়ে তাঁর কাজে ও রচনায় উৎসাহদাত্রীরূপে মূল্যবান সহায়
তিনি পেয়েছিলেন ভগিনী নিবেদিতাকে। জগদীশচন্দ্রের জীবনের ইতিহাসে এই
মহনীয়া নারীর নাম সম্মানের সঙ্গে রক্ষার যোগ্য।”
১৯০০ খ্রিস্টাব্দে প্যারিস প্রদর্শনী এবং একটি ‘ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস
অব ফিজিক্স' আয়োজিত হয়েছিল, যেখানে ডঃ বসু তাঁর নতুন আবিষ্কার
‘রেসপন্স অব ইনঅরগ্যানিক অ্যান্ড লিভিং ম্যাটার' বিষয়ে আলোচনা
করেছিলেন। সেই সময় স্বামীজী এবং নিবেদিতা উভয়েই উপস্থিত ছিলেন।
ডঃ বসুর কৃতিত্বে তাঁরা অত্যন্ত আনন্দ ও গর্ববোধ করেন। এরপরেই ডঃ
বসু ইংল্যান্ডে চলে যান। কিছুদিন পরে ভগিনী নিবেদিতাও ইংল্যান্ডে ফিরে
গিয়েছিলেন। সেই সময় ডঃ বসু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং
তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। তারপর নিবেদিতা তাঁকে উইম্বলডনে তাঁর
মায়ের কাছে রেখে সুস্থ করে তোলেন।